কাউখালীবাসী আজও ভুলতে পারেনি সিডরের ভয়াবহতা
পিরোজপুরের
কাউখালীসহ উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে
২০০৭ সালের
১৫ নভেম্বর
বয়ে যাওয়া
প্রলয়ংকরী সাইক্লোন সিডরের ভয়াবহতার স্মৃতি
মানুষ আজও
বয়ে বেড়াচ্ছে।
আর বেঁচে
যাওয়া সর্বস্ব
হারানো মানুষের
অনেকেই এখনও
স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে পারেনি।
সেই ভয়াবহতার ৭বছর
অতিবাহিত হয়ে
গেলেও এখনও
দুর্গতদের পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন করা
সম্ভব হয়নি।
নিজ নিজ
পেশায় ফিরতে
পারেনি বহু
মানুষ। সিডর’র ক্ষতি
এখানকার মানুষ
কিছুটা পুষিয়ে
নিতে পারলেও
ভয়াবহতার কথা
আজও ভুলতে
পারেনি। ১২/১৫ ফুট
উঁচু জলোচ্ছ্বাসে
সব কিছু
লন্ডভন্ড করে
দিয়ে যাওয়ার
পর অসংখ্য
গবাদি পশুর
মৃতদেহের মধ্যে
কাউখালীর ৯
জন মানব
সন্তানের লাশ
শামিল হয়েছিল।
উপজেলার বিভিন্ন
সড়ক ব্রিজ-কালভাট প্রশাসনের
উদাসিনতার কারনে আজও মেরামত হয়নি
।
২০০৭ সালের ১৫
নভেম্বর সিডরে
উপকূলের জেলা
পিরোজপুরে মানবসম্পদের পর সবচেয়ে বড়
ধরনের ক্ষতের
সৃষ্টি করেছিল
ফলজ ও
বনজ বৃক্ষ
সম্পদের। প্রলয়ংকরী
ঘূর্ণিঝড়ে সে সময় অসংখ্য বনজ
ও ঔষধি
বৃক্ষসহ প্রায়
কোটি টাকার
সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছিল। বিভিন্ন
ধরনের হাজার
হাজার বাগান
পরিণত হয়েছিল
বিরানভূমিতে। গত ৭ বছরেও সে
ক্ষত পূরণ
করতে পারেনি
এ উপজেলার
বৃক্ষপ্রেমী মানুষজন। সরোজমিন দেখা গেছে,
বিভিন্ন সড়ক
ও ব্রিজ-কালভার্টেও আবস্থা
যেমন আমরাজুড়ি-কাউখালী-নৈকাঠি
সড়ক ও
কাউখালী-গুয়াটন-ঝালকাঠি সংযোগ
সড়ক মেরামত
কাজ আজও
শেষ হয়নি।
চিড়াপারা-ভিটাবাড়িয়া সড়কের
উপর ৭টি
ব্রিজ-কালভাট
আজও মেরামত
করা হয়নি
কোন রকম
জোড়া-তালী
দিয়ে যানবাহন
চলাচল করছে।
উপজেলা হাসপাতালের
ক্ষতিগ্রস্ত ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি সেই রকম
পরে আছে।
কাউখালীতে সিডর’র ৭ বছর
পরে আবাসন
ও খাদ্য
সংকট পূরন
হওয়ায় তাতে
ক্ষতিগ্রস্তরা খুশি। তবে প্রতিবছর এ
সময়টায় সিডরের
কথা মনে
করে তারা
আঁতকে ওঠেন।
ব্যাপক সম্পদ
এবং স্বজন
হারানোর ব্যথায়
কেঁদে বুক
ভাসান।
মসজিদগুলোতে
এবং বাড়িবাড়ি
দোয়া মোনাজাতের
মধ্যদিয়ে এবারের
সিডরকে স্মরণ
করবার প্রস্তুতি
নিয়েছেন তারা।
কাউখালীতে ১৫ হাজার ঘর-বাড়ী,
শতাধিক ব্রীজ
কালভার্ট, বহুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অফিস
আদালত, হাট-বাজার সম্পূর্ণ
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সরকারী হিসাবে প্রায়
একশ কোটি
টাকার ক্ষয়
ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত
পরিবারগুলো নিজেদের প্রচেষ্টায় এবং বেসরকারি
বিভিন্ন সাহায্য
সংস্থা ও
এনজিও’র
সহযোগিতা নিয়ে
ঘুরে দাঁড়িয়েছেন
বলে ক্ষতিগ্রস্তরা
দাবি করেছেন।
আবাসন সংকট মোকাবেলায়
সরকারি-বেসরকারি
উদ্যোগে বহুলাংশে
সমাধান হয়েছে
বলেও তারা
দাবি করেছেন।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত
উপকূলীয় বেড়িবাঁধ
ও অভ্যন্তরীণ
রাস্তাঘাট ইতিমধ্যে অধিকাংশ মেরামত সম্পন্ন
হয়েছে, তার মতে অর্থনৈতিক ও
আবাসন সংকট
তিনি এবং
এখানকার মানুষ
ইতিমধ্যে বহুলাংশে
কাটিয়ে উঠেছে।
কাউখালীর সাবেক
ইউপি চেয়ারম্যান
তসলিম উদ্দিন
চুন্নু পুনর্বাসন
কাজে নিয়োজিত
থেকে তার
অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন,
‘কাউখালী এলাকার
মানুষ সিডরের
ভয়াবহতার কথা
কখনও ভুলতে
পারবে না,
তবে ক্ষতিগ্রস্ত
পরিবারগুলোর এখন আর তেমন সমস্যা
নেই’।
বিভীষিকাময়
সেই রাতের
কথা স্মরণ
করে আজ
থেকে ক্ষতিগ্রস্তউপকূলীয়
জনপদগুলোতে স্বজন হারানোদের আত্মার শান্তি
কামনায় মসজিদে
এবং ঘরে
ঘরে আয়োজন
করা হয়েছে
দোয়া ও
মিলাদ মাহফিলের।
এছাড়া বিভিন্ন
বেসরকারি সংস্থা
এ উপলক্ষে
নিয়েছে নানা
কর্মসূচি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন