কাউখালীতে তিনটি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর এক নারী আটক
পিরোজপুরের কাউখালীতে তিনটি মন্দিরের ভেতর ঢুকে মিনু খানম (২৫)নামে এক বিকারগ্রস্ত নারী পালাক্রমে সাতটি প্রতিমা ভাংচুর করেছে। এসময় স্থানীয়রা ওই নারীকে আটক করে গনধোলাই দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে কাউখালী শহরের উত্তর বাজার আখড়াবাড়ি মন্দিরে এ প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ওই নারীর এখনও পরিচয় মেলেনি। সে গত কয়েকদিন আগে কাউখালী শহওে পাগল বেশে ঘোরাফেরা করে আসছিল।
স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে,কাউখালী উপজেলা সদরের উত্তবাজার আখড়া বাড়ির মন্দিরে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে অপ্রকৃতস্থ মিনু খানম নামে এক নারী ঢুকে পালাক্রমে তিনটি মনিন্দরে রক্ষিত প্রতিমা ভাংচুর চালায় । এসময় মন্দিরের এক ভক্তের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ওই নারীকে আটক করে। পরে সে উত্তেজিত জনতার গনধোলাইয়ের শিকার হয়। পুলিশ খবর পেয়ে জনতার কবল হতে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি এডভোকেট পরিতোষ সমদ্দার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,আখড়া বাড়ির শ্রী শ্রী মদনমোহন জিউর কেন্দ্রীয় দূর্গামন্দিরের ৪ টি প্রতিমা,শ্মশানকালী মন্দিরের প্রতিমা ও লোকনাথ মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। এতে মন্দিরের ৭ টি প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরের শ্রী শ্রী স্বরস্বতী প্রতিমা, শ্রী শ্রী কার্তিক প্রতিমা, শ্রী শ্রী লক্ষ্মী প্রতিমা, শ্রী শ্রী গণেশ প্রতিমা এবং কেন্দ্রীয় শ্মশানের শ্রী শ্রী কালী প্রতিমা ও কেন্দ্রীয় লোকনাথ মন্দিরের লোকনাথের বিগ্রহ এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নাথ মন্দিরে নবনির্মিত বিশালাকৃতির একটি গণেশ প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়।
উপজেলা নিব্র্াহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আটককৃত ওই নারী গতদুইদিন ধরে কাউখালীর বাজারে পাগল বেশে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানন। মন্দিরের ভক্তবৃন্দরা জানান বৃটিশ আমল থেকে অদ্যবধি মন্দিরে কোন প্রতিমা ভাংচুর কিংবা পূজা পার্বনে কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি এখানে। দিনে দুপুরে এমন ঘটনায় ভক্তবৃন্দরা হতবাক হন। প্রতিমা ভাংচুরের খবর ছড়িয়ে পড়লে আখড়াবাড়ি আশ্রমের মন্দির প্রাঙ্গনে শত শত ভক্তরা ভীর করছেন ।
বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনা উপজেলা সহ সারাদেশে ভক্তদের হৃদয়ে আঘাত হেনেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কাউখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি কোন সুস্থ মানুষের কাজ নয়। আটককৃত নারীকে পুলিশ হেফাজতে কাউখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে আজ শুক্রবার বিকালে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. শামীমুল হক সিদ্দিকী ও জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন আখাড়াবাড়ি মনিন্দর পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি এডভোকেট পরিতোষ দেবনাথ বাদি হয়ে আজ শুক্রবার বিকালে কাউখালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।